বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে যোগ দিতে চাইলেন। তবে দেবদাস নাম পরিত্যাগ করতে চাইলেন না। স্বাধীন দেশের বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেন পাকিস্তানীদের মতই অসহিষ্ণু। দেবদাস নামে কোন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের নথিপত্রে নেই এই অযুহাতে চলল টালবাহানা। অধ্যাপক দেবদাস তার জায়গায় অটল। তিনি এফিডেভিট করালেন, নাম পরিবর্তনকে আইন সিদ্ধ করলেন। এরপর স্বাধীন দেশের বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রশ্ন তোলে তার মানসিক স্থিরতা নিয়ে। পাকিস্তানীদের অসমাপ্ত নির্যাতনের ষোলকলা পূরণ হলো স্বাধীন দেশে।
বীতশ্রদ্ধ অধ্যাপক কাজে ইস্তফা দিয়ে পদত্যাগ পত্র লিখলেন। ১৯৭৩ সালের জুলাই মাসে দাখিল করা পত্রে গভীর বেদনা আর অভিমান থেকে তিনি চাইলেন পদত্যাগ কার্যকর করা হোক ১৯৭১ সালের আগস্ট থেকে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ! সহজেই সম্মতি দিলেন তাঁর এই ইচ্ছায়।
স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর আজ তাকে একুশে পদকের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।
আজ এই ভেবে ভালো লাগছে , এ সমাজের কোনো কোনো মানুষ তাকে মনে রেখেছেন। তার নাম প্রস্তাব করেছেন একুশে পদকের জন্য। ১৯৫২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যিনি ফলিত গণিতে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে বগুড়া ও কুমিল্লায় দুটি কলেজে অধ্যাপনা করে চলে যান মেলবোর্নে, গণিতে উচ্চতর পড়াশুনা করতে। ফিরে এসে যোগ দেন করাচী বিশ্ববিদ্যালয়ে।
১৯৬৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। এরপরের ঘটনা কেবল বলেছি একটু । প্রচন্ড মেধাবী আর নিভৃতচারী আত্মমগ্ন ৮৭ বছর বয়সী এই মানুষটির সারা জীবনের প্রতিবাদের কাছে আমার আজন্ম ঋণ.....
- Saikat Biswas